এপ্রিল ২০, ২০২৪

‘মিস্টার কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে ভারতের মেন্টর হয়ে যাচ্ছেন। তা দেখে কেউ কেউ মাশরাফি বিন মর্তুজাকেও টিম বাংলাদেশের মেন্টর দেখতে চাচ্ছেন। কারো কারো ভাবনায় মাশরাফি জাতীয় দলের মেন্টর, ক্রিকেট ম্যানেজার আরও অনেক কিছু। সেটা অস্বাভাবিক চাওয়া কিংবা বাড়াবাড়ি নয়।

মহেন্দ্র সিং ধোনির মত তিন-তিনটি বিশ্বকাপ এনে দিতে পারেননি, কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এই মাশরাফিই নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। তার নেতৃত্বগুণের কথা সবারই জানা।

কাছের মানুষরা জানেন, ব্যক্তি হিসেবেও মাশরাফি কতটা উদার, প্রাণখোলা। ছোট বড় সবার প্রতি সমান ভালবাসার মিশেলে এক অন্যরকম ব্যক্তিত্ব মাশরাফি। তার সংস্পর্শে পুরো দল হয়ে ওঠে এক পরিবার।

মাঠে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও মাশরাফি বারবার দেখিয়েছেন দূরদর্শিতা। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৭‘র আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালসহ ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মত তিন বড় শক্তির বিপক্ষে সিরিজ বিজয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্বে ছিলেন মাশরাফি।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি এমন এক ব্যক্তিত্ব, যার উপস্থিতিই দলকে করে তোলে চাঙ্গা। সতীর্থ ও অনুজপ্রতীম ক্রিকেটাররা পান মাথার ওপরে বিরাট ‘ছাতা’। তাই অধিনায়ক, ক্রিকেটার এবং মানুষ মাশরাফি সবার প্রিয়। ভালবাসার আর আস্থার জায়গা। এমন এক ব্যক্তিত্ব মেন্টর বা ম্যানেজার হয়ে দলের সঙ্গে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে গেলে ভালোই হতো।

কিন্তু কঠিন সত্য হলো, এ মুহূর্তে সে সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোটায়। আসলে বাংলাদেশে সে সংস্কৃতিটাই নেই। মাশরাফির মতো একজন কিংবদন্তিও এখন পর্যন্ত মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ক্ষেত্রটাই পাচ্ছেন না ঠিকমতো। তাকে কী করে দলের মেন্টর বা ম্যানেজার করা হবে! এ যে অলীক কল্পনা!

মাশরাফিকে দলের সাথে ম্যানেজার করে পাঠানো বহুদূরে, ভেতরের খবর হলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিম বাংলাদেশের সাথে যাচ্ছেন না কোনো টিম লিডার বা ক্রিকেট ম্যানেজার।

লজিস্টিক ম্যানেজার হয়ে যাবেন ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার সাব্বির খান। এর বাইরে নির্বাচকদের মধ্য থেকে একজন যাবেন। দুজনও যেতে পারেন। তবে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান জানিয়েছেন, এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর বাইরে কোনো টিম লিডার বা ক্রিকেট ম্যানেজার যাবেন না।

মাঝে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা আর জিম্বাবুয়ে সফরে টিম লিডার রাখা হয়েছিল। বোর্ডের তিন পরিচালক বিশেষ করে সিনিয়র পরিচালক জালাল ইউনুস আর আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি দলনেতা হয়ে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড আর জিম্বাবুয়ে গেছেন।

খালেদ মাহমুদ সুজন সফরসঙ্গী হিসেবে শ্রীলঙ্কার সাথে হোমে ও ট্যুরে বোর্ডের প্রতিনিধি ছিলেন। কিন্তু এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোনো বোর্ড পরিচালক ওই পদে থাকছেন না।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মত বড় আসরে কেন কোনো টিম লিডার ও ক্রিকেট ম্যানেজার নেই? ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার আকরাম খানের জবাব, ‘আসলে কেউ যেতে চাচ্ছেন না। যেহেতু সামনে বোর্ড নির্বাচন, তাই সবাই ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে। দলের সঙ্গে দেশের বাইরে এক থেকে দেড় মাস থাকার ইচ্ছে নেই কারো।’

জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি ক্রিকেট অপারেশন্স প্রধান আকরাম খান নিজেও টিম লিডার হয়ে যেতে অনিচ্ছুক। তারও কথা, ‘আমরা তো খেলা দেখতে যাব। তবে কোনো পদ-পদবি নিয়ে দলের সফরসঙ্গী হবো না এবার।’