এপ্রিল ২৬, ২০২৪

নিউজ ডেস্ক: জ্বালানির তীব্র ঘাটতি, শেষ হয়ে যাচ্ছে জলবিদ্যুৎ। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী প্রতিদিন ১০ ঘন্টা করে লোডশেডিং থাকবে। একথা জানিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। ২২ মিলিয়ন জনসংখ্যাবহনকারী দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কারণ আমদানির জন্য অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুতের কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, মাসের শুরু থেকে সাত ঘণ্টা পাওয়ার কাট রাখার কথা ভাবা হয়েছিল এখন তা বাড়িয়ে ১০ ঘণ্টা করা হচ্ছে। কারণ থার্মাল জেনারেটরে কোনো তেল নেই। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার ৪০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুৎ জল থেকে উত্পাদিত হয়, তবে কম বৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ জলাশয় বিপজ্জনকভাবে শুকিয়ে গেছে।

দেশে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কয়লা ও তেল থেকে। উভয়ই আমদানি করা হয়, কিন্তু সরবরাহের জন্য দেশের কাছে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা নেই বলে কয়লা ও তেলের সরবরাহ কম।

এদিকে দেশের প্রধান জ্বালানি বিক্রেতা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (সিপিসি) জানিয়েছে, কমপক্ষে দুইদিন দেশে ডিজেল থাকবে না। সিপিসি পেট্রোল স্টেশনগুলিতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষারত গাড়ি চালকদের বলেছে যতক্ষণ না আমদানিকৃত ডিজেল আসছে ততক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট না করতে। বছরের শুরু থেকে পেট্রোলের দাম ৯২ শতাংশ এবং ডিজেলের দাম ৭৬ শতাংশ বেড়েছে । কর্মকর্তারা বলছেন , সরকার এলপি গ্যাস এবং কেরোসিনের সর্বশেষ চালানের জন্য ৪৪ মিলিয়ন ডলার জোগাড় করতে ১২ দিন সময় চেয়েছে। কলম্বো বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে ২০২০ সালের মার্চ মাসে একটি বিস্তৃত আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল । কিন্তু এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়। অনেক হাসপাতাল রুটিন সার্জারি বন্ধ করে দিয়েছে। সুপারমার্কেটগুলিকে চাল, চিনি এবং দুধের গুঁড়ার মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা সরকার বলেছে যে, তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে বেলআউট চাইছে। ভারত ও চীনের কাছ থেকে আরও ঋণ চেয়েছে তারা । এর মাঝেই কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সংকট আরও বেড়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের পর্যটন এবং রেমিটেন্সে। অনেক অর্থনীতিবিদ এই সংকটের জন্য সরকারী অব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করেছেন ।