মার্চ ২৯, ২০২৪

নিউজ ডেস্ক: ন্যাটোতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। এই পদক্ষেপ ইউরোপে স্থিতিশীলতা আনবেনা বলেও জানিয়েছে দেশটি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন। এ বছরই ন্যাটোতে যুক্ত হচ্ছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। মার্কিন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করার একদিন পরই এই সাবধান বার্তা দিলো রাশিয়া। মস্কো স্পষ্টভাবেই ন্যাটোর সদস্য বৃদ্ধির বিরোধিতা করে আসছে। পেসকভও তার বক্তব্যে একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ন্যাটো এমন কোনো জোট না যারা শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে কাজ করে।

এটি আরও বড় হলে তা ইউরোপ মহাদেশের কোনো নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না।

বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, এই গ্রীষ্মেই নর্ডিক দেশ দুটো ন্যাটোতে যোগ দেয়ার লক্ষ্যে সবকিছু প্রস্তুত করছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ন্যাটোর সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে বেড়ে ৩২ হতে যাচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা দ্য টাইমস গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলছেন, ইউক্রেনে আক্রমণ করে রাশিয়া বিশাল কৌশলগত ভুল করেছে। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য হওয়া থেকে আটকানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলো নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যাটোর সদস্য হচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই দুই নর্ডিক দেশগুলোকে ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে এরইমধ্যে একাধিক আলোচনা হয়েছে। ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাসহ সেই আলোচনায় ছিল সুইডেন ও ফিনল্যান্ডও। এ নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা টাইমসকে বলেন, এই পদক্ষেপ আর কিছু নয়, এটি পুতিনের একটি বড় কৌশলগত ভুলের ফলাফল। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের জুনেই ন্যাটোতে যোগ দিচ্ছে ফিনল্যান্ড। এরপরেই যুক্ত হবে সুইডেনও।

মস্কো যদি এবারই প্রথম না, আগে থেকেই ফিনল্যান্ডকে সাবধান করে আসছিল। দুই দেশের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৪০০ কিলোমিটারের সীমান্ত। তবে রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার পর এখন ন্যাটোতে যোগ দেয়ার বিকল্প দেখছে না ফিনল্যান্ড। ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী সানা ম্যারিন আগেও ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, সময় হয়ে এসেছে। ইউক্রেনে হামলার মধ্য দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের সম্পর্ক বদলে গেছে। তাই ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

অন্যদিকে সুইডেনের শাসক দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ঐতিহ্যগতভাবে ন্যাটোর বিরুদ্ধে ছিল সবসময়। তবে এবার তাদেরও টনক নড়েছে। প্রতিবেশি দেশগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়া যেভাবে আগ্রাসন চালাচ্ছে তাকে নিজের জন্যও বড় হুমকি মনে করছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে সোমবার বলা হয়, রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা করলো, সুইডেনের নিরাপত্তার ধারণা মৌলিকভাবে পাল্টে গেছে।

ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পূর্বে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যে দাবি পাঠিয়েছিল, তাতে ন্যাটোতে নতুন সদস্য যুক্ত করা বন্ধের দাবি ছিল। একইসঙ্গে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর কার্যক্রম বন্ধের দাবিও তুলেছিল রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর ন্যাটোর সদস্যও বাড়তে চলেছে এবং পূর্ব ইউরোপেও আগের তুলনায় অধিক ন্যাটো সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।