মে ১৮, ২০২৪

পিবিএ ডেস্ক: উহানে পৌঁছে গিয়েছেন ডাব্লিউএইচও-র প্রতিনিধিরা। কিন্তু তাঁরা সকলের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ দল আগেই পৌঁছে গিয়েছিল চীনের উহানে। বৃহস্পতিবার থেকে তারা করোনার উৎসের সন্ধানে কাজ শুরু করল। এর আগে উহানেই ১৪ দিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হয়েছে তাদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, পশু-পাখির যে বাজার থেকে প্রথম করোনা ছড়িয়েছিল বলে চীন দাবি করেছিল, তাদের কাজও সেখান থেকেই শুরু হবে।

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি করোনাকে গ্লোবাল প্যানডেমিক বলে ঘোষণা করেছিল ডাব্লিউএইচও। তার বেশ কিছু দিন আগে থেকেই চীনে করোনার সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে ছড়াতে শুরু করে। সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল উহান। প্রথমে উহানের সীমানা বন্ধ করে প্যানডেমিক মোকাবিলার চেষ্টা করে দেশের সরকার। তারপর কড়া লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। তারই মধ্যে করোনার সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। চীনের দেওয়া প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী তিন হাজার ৯০০ মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও এই সংখ্যাটি ঠিক কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। অনেকেরই বক্তব্য, চীন উহানে মৃত্যুর সংখ্যা কম করে দেখিয়েছে।

১৯৯৭ সালে হংকংয়ে এইচ৫এন১ ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ তারপর ২০০৩, ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়৷ ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৬৩০ জন বার্ড ফ্লুতে সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৩৭৫ জন মারা গেছেন৷

তবে লকডাউনের জেরে উহানে সংক্রমণের হার ক্রমশ কমতে শুরু করে। প্রশ্ন হলো, উহান থেকেই কি করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত? চীনের বক্তব্য, উহানের একটি পশু বাজার থেকে প্রথম করোনা ছড়ায়। তবে অ্যামেরিকা প্রথম থেকে দাবি করছে, উহানের একটি ল্যাবরেটরি থেকে করোনা প্রথম সংক্রমিত হয়। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া চীনের কয়েকজন গবেষকও একই কথা বলেছেন। এখনো পর্যন্ত ওই ল্যাবরেটরিতে চীনের প্রশাসন ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীরা কি সেখানে ঢুকতে পারবেন? তাঁরা কি সকলের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন?

কোনো প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি। বস্তুত, বেশ কয়েক মাস আগেই উহানে গিয়ে করোনার উৎস নিয়ে গবেষণা করতে চেয়েছিল ডাব্লিউএইচও। কিন্তু চীন আলোচনা দীর্ঘ করছিল। সেই আলোচনার মধ্যেই ডাব্লিউএইচও-র দুই কর্মকর্তা চীনে পৌঁছলে তাঁদের দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত ডাব্লিউএইচও-কে উহানে যেতে দেওয়া হলেও প্রতিনিধিদের কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার কোয়ারান্টিন শেষ করে যখন তাঁরা বাসে ওঠেন, তখন গোটা এলাকা হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।

উহানের বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি, প্রশাসন যত দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারতো, বাস্তবে তা নেয়নি। কোনো কোনো মহলের অভিযোগ, ডাব্লিউএইচও আরো আগে ব্যবস্থা নিতে পারতো। এই অভিযোগগুলি যাঁরা করছেন, উহানের সেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে আদৌ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা কথা বলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।

পিবিএ/এমএসএম