করোনার উপসর্গ দেখা দিতেই পরীক্ষা করিয়েছিলেন। তবে সে রিপোর্ট হাতে আসার আগেই মারা যান ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের এক নারী। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে না পেরে মোটরবাইকে করে ওই মহিলার মরদেহ নিয়ে শ্মশানে পৌঁছান পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের এই ছবিতেই ফুটে উঠেছে ওই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির বাস্তব চেহারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকুলম জেলার মন্দাসা মণ্ডল গ্রামে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওই নারীর। বেশ কিছুদিন ধরেই করোনার নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। এরপর পরীক্ষাও করান তিনি। তবে নিজের কোভিড রিপোর্ট আর দেখে যেতে পারেননি। তার আগেই মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনিত হতে থাকে। শেষে মৃত্যু হয় তার।
এরপর ওই নারীর দেহ সৎকারের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ শুরু হয় পরিবারের। কোনোভাবেই জোগাড় করে উঠতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। এমনকি, অন্য কোনো গাড়ির মাধ্যমে মরদেহ শ্মশানের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা যায়নি। অগত্যা ওই নারীর মরদেহ বাইকে করে শ্মশানে নিয়ে যান তার স্বামী ও সন্তান। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।
করোনার গ্রাসে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতোই রীতিমতো ধুঁকছে অন্ধ্রপ্রদেশ। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ওই রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৯৮১ জন। ওই সময়ের মধ্যে মারা গিয়েছেন ৫১ জন কোভিড রোগী।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর করোনা মোকাবিলায় ১ হাজার ৮৮টি অ্যাম্বুল্যান্সসহ ১০৪টি মোবাইল ইউনিটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। চলতি বছরেও কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার যথাসম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও যে পরিস্থিতি কোনোভাবেই আয়ত্তে আনা যাচ্ছে না। তা ফের এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ছবি।
গোটা ভারতজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু। মঙ্গলবারও ভারতে নতুন কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার ১৪৪। আগের দিনে ছিল ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৯১। প্রকৃত সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি বলেই ধারণা।