মে ১২, ২০২৪

মহামারি করোনার প্রথম ঢেউয়ে কোনো রকমভাবে টিকে থাকলেও দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বিদেশি অর্ডার ও অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেকে আবার অর্ধেক শ্রমিক দিয়ে চালু রেখেছেন কারখানা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে প্রণোদনা চেয়েছেন তারা।

স্বাভাবিক সময়ে শ্রমিকদের কর্মতৎপরতা আর সেলাই মেশিনের শব্দে মুখর থাকলেও ভারতে এখন ধুঁকে ধুঁকে চলছে পোশাক তৈরির কারখানা। শুধু পোশাক কারখানা নয়, দীর্ঘ লকডাউনের কারণে বন্ধ হওয়ার পথে রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ছোট-বড় সব কলকারখানা।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের। ব্যবসা বন্ধ থাকায় অনেকেই পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। অনেকে আবার ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অর্ধেকেরও কম শ্রমিক নিয়ে চালু রেখেছেন কারখানা। জাভির দালাল নামের এক ব্যবসায়ী দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে জুতা তৈরি করে আসছেন। তবে অতীতে কখনোই এমন সংকটে পড়তে হয়নি তাকে। জাভির দালাল বলেন, এই প্রথম কোনো অর্ডার পাচ্ছি না। টাকা নেই। শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার মতো অবস্থাও নেই। শ্রমিকরাও অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। ভেবেছিলাম জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পরিস্থিতি ভালো হবে। কে জানত পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

তিনি আরও বলেন, মাত্র ৩০ জন শ্রমিক নিয়ে এখন কারখানা চালু রেখেছি। আগে যেখানে ৭০ থেকে ৭৫ জন শ্রমিক কাজ করত এখন সেটা নেমে এসেছে ২০ থেকে ২৫ জনে। কাঁচামালের সরবরাহ নেই। মার্কেট বন্ধ। কীভাবে ব্যবসা টিকিয়ে রাখব বুঝতে পারছি না।

গেল ৩১ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখান চালু রাখার নির্দেশ দেয় নয়াদিল্লি প্রশাসন। শ্রমিকদের কিছু অর্থ সহায়তা দেওয়া হলেও কোনো ধরনের প্রণোদনা পাননি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ভারতের ফেডারেল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তথ্য বলছে, করোনা মহামারির কারণে গত কয়েক মাসে পণ্য উৎপাদন কমে গেছে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ। আর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন এক কোটিরও বেশি মানুষ।

সূত্র: ইকোনমিক টাইমস