এপ্রিল ২৬, ২০২৪

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০তে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। অজিদের দেওয়া ১২২ রানের লক্ষ্য পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে টাইগাররা। এই জয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২১ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।

বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন মোহাম্মদ নাইম ও সৌম্য সরকার। স্টার্কের করা তৃতীয় ডেলিভারিতেই মাথায় আঘাত পান নাইম। তবে সে যাত্রায় কনকাশন টেস্টে উৎরে যান তিনি।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম স্ট্রাইক পান সৌম্য। কিন্তু রানের খাতা খোলার আগেই স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। অপর ওপেনার মোহাম্মদ নাইম এদিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ। জশ হ্যাজেলউডের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ৯ রান।

শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর দেখেশুনে খেলতে থাকেন সাকিব আল হাসান ও মাহেদী হাসান। তবে দলের চাহিদা মিটিয়ে সিংগেল বের করার চাইতে উড়িয়ে মারতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন মাহেদী। বেশ কয়েকবার অল্পের জন্য বেঁচেও যান তিনি। দুজনের ব্যাটে অষ্টম ওভারেই দলীয় অর্ধশতক পূরণ হয়।

কিন্তু এরপরই ছন্দপতন। ছয় বলের ব্যবধানে সাকিব ও রিয়াদ দুজনই বোল্ড হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সাকিব ২৬ রান করলেও রিয়াদ ফেরেন শূন্যতে। এরপর মাহেদী ২৩ রানে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হলে ম্যাচ অনেকটাই ঝুঁকে যায় অস্ট্রেলিয়ার দিকে।

এমতাবস্থায় দলের হাল ধরেন আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান। দুজনের ব্যাটে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। অপরাজিত পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করে হাসিমুখে সাজঘরে ফেরেন তারা।

আফিফ ও সোহান রানে অপরাজিত থাকেন। এই দুজনের নৈপুণ্যে বল হাতে রেখে অনবদ্য এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্টার্ক, হ্যাজেলউড, অ্যাগার, জাম্পা প টাই প্রত্যেকে একটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। অজিদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন অ্যালেক্স ক্যারি ও জশ ফিলিপ। মাহেদী হাসানের করা প্রথম ওভার দেখে খেলে মাত্র ১ রান যোগ করেন দুই ব্যাটসম্যান।

নাসুম আহমেদের করা পরের ওভারে দুই চার হাঁকিয়ে ভালো শুরুর আভাস দেন ক্যারি। কিন্তু অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। মাহেদীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে নাসুম আহমেদের তালুবন্দী হন এই ওপেনার। এর আগে করেন ১১ রান।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে ১০ রানে বোল্ড হন ফিলিপ। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন ময়জেস হেনরিক্স ও মিচেল মার্শ। দুজনে মিলে গড়েন ৫৭ রানের জুটি। সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ৩০ রান করা হেনরিক্স।

অল্প সময় পর শরিফুলের বল মিড উইকেট দিয়ে মারতে গিয়ে আউট হন মার্শ। নুরুল হাসানের তালুবন্দী হওয়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন তিনি। এরপর আর কেউই উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি।

১৮তম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথমে ৪ রান করা অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে বোল্ড করেন তিনি। পরের বলে অ্যাস্টন অ্যাগারকে সাজঘরে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। তবে সফল হননি।

অ্যাস্টন টার্নার ফেরেন ৩ রানে। শেষ দিকে মিচেল স্টার্কের ১৩ ও অ্যান্ড্রু টাইয়ের ৩ রানের অপরাজিত দুই ইনিংসের সৌজন্যে লড়াই করার মতো পুঁজি পায় অস্ট্রেলিয়া।

বাংলাদেশের হয়ে একাই ৩ উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান। শরিফুল ইসলাম দুটি এবং সাকিব আল হাসান ও মাহেদী হাসান একটি করে উইকেট শিকার করেন।

সিরিজের তৃতীয় টি-২০তে আগামী শুক্রবার মুখোমুখি হবে দুই দল। এই ম্যাচ জিতলে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারানোর গৌরব অর্জন করবে বাংলাদেশ।