মে ২১, ২০২৪

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কঠিন সময় পার করছে ভারত। প্রতিদিন দেশটিতে বেড়ে চলেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় বিভেদের দেয়াল ভেঙ্গে করোনায় মৃত হিন্দুদের মৃতদেহ সৎকার করে মানবতার বন্ধন আরো দৃঢ় করেছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুসলিমরা।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনৌয়ের বাসিন্দা ইমদাদ ইমান (৩৩) পেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার। পাশাপাশি একটি বিপণি বিতানেরও মালিক তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর থেকেই মানুষের শেষকৃত্য আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন তিনি। এ কাজে গঠন করেছেন ‘কোভিড ১৯ তদফিন কমিটি’। কমিটির সদস্যসংখ্যা বর্তমানে ২২ জন।

ইমদাদ জানান, এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত ৭ জন হিন্দুর সৎকার ও ৩০ জন মুসলিমের দাফনকাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। তিনি বলেন, ‘যাদের সৎকার ও দাফন আমরা করেছি, তাদের অধিকাংশের আত্মীয় পরিজন শহরে থাকেন না। কয়েক জনের আত্মীয় থাকলেও দেখা গেছে তারাও করোনায় আক্রান্ত। তাই আমরা এগিয়ে এসেছি।

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজেও দেখা গেছে একই ছবি। এলাহাবাদ হাইকোর্টের যুগ্ম নিবন্ধনকারী (জয়েন রেজিস্ট্রার) হেম সিংহ সপ্তাহখানেক আগে তার বন্ধু সিরাজকে জানিয়েছিলেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত। তারপর হাসপাতালে ভর্তি করালেও বাঁচানো যায়নি তাকে। হেম সিংহের মৃত্যুর পর সংক্রমণের ভয়ে শেষকৃত্যে অংশ নিতে রাজি হননি পরিবারের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত ৪০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বন্ধুর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন সিরাজ।

ইতিমধ্যেই ইসলামিক মাদ্রাসা মডার্নাইজেশন টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রস্তাব দিয়েছে, সমস্ত মাদ্রাসাকে কোভিড পরিষেবার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। দেশের স্বার্থে মাদ্রাসা শিক্ষকেরা করোনা যোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।

মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার মান্ডিদ্বীপ এলাকায় মুসলিমরা ৫ একর ইদগাঁ ময়দান ছেড়ে দিয়েছেন করোনা সেন্টার তৈরির জন্য। সম্প্রতি ওই রাজ্যের বিদিশাতেও হিন্দুর সৎকারে মুসলিম যুবকদের এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে।

গুজরাতের বদ্দোরায় মুসলিমদের উদ্যোগে একটি মসজিদকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে।