এপ্রিল ২৭, ২০২৪

অতীতে আরব দেশগুলোতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হত উট। বর্তমান সময়ে সেই উটের স্থান দখল করেছে আধুনিক মটরযান। তবে সম্প্রতি পবিত্র হজ্জ পালণের উদ্দেশ্যে অতীতের মত করে সেই উটে চড়েই মক্কা নগরীতে পৌঁছেছেন এক সৌদি পর্যটক।

সৌদি সংবাদ মাধ্যম আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে জানা যায়, সৌদি পর্যটক উসমান শাহিন হজ পালন করতে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল আসির প্রদেশের অন্তর্ভূক্ত খামিস মাশিত শহর থেকে মক্কা নগরীর উদ্দেশ্যে উটে করে যাত্রা শুরু করেন। তরিক আল ফিল তথা যে পথ দিয়ে আবরাহার নেতৃত্বে হস্তিবাহিনী কাবা ঘর ভাঙ্গার জন্য গিয়েছিল, সে পথ ধরে তিনি হজ পালন করতে মক্কা পৌঁছেছেন।

উটের পিঠে চড়ে মক্কা নগরী পৌঁছতে উসমান শাহিনকে পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ ৬৭৫ কি.মি পথ এবং সময় লেগেছে ২৫ দিন। এসময় যাত্রাপথে তিনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে অবস্থান করেন।

উসমান শাহিন বলেন, ‘অনেক দিন যাবত ভেবে এই যাত্রার জন্য আমি প্রস্তুতি নিয়েছি। হজ যাত্রাকালে আমি বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে দাঁড়িয়েছি। এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া প্রাচীনকালে হাজিদের হজযাত্রার ক্লান্তি ও কষ্টের চিত্রও তুলে ধরেছি।’

উসমান শাহিন আরো জানেন, ‘পূর্বপুরুষদের হজ পালনের অনেক ঘটনা আমরা শুনেছি। তাই প্রাচীন কালের ঐতিহাসিক আল ফিল পথ দিয়ে সৌদি ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে আমি হজযাত্রা শুরু করি। ইসলামপূর্ব সময়ে এই পথটি ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আধুনিক যুগে আমি প্রথম ব্যক্তি যিনি হজ পালন করতে উটে চড়ে প্রাচীন পথ পাড়ি দিয়েছি।’

উসমান শাহিন শুধু সৌদির ভেতরে অ্যাডভেঞ্চার করেছেন তা নয়। বরং তিনি গত পাঁচ বছরে সৌদির ঐতিহ্য তুলে ধরতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গিয়েছেন। সৌদি ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তিনি এভারেস্ট জয় করেছেন। নিজের ভাইকে নিয়ে তিনি হিমালয়ে আরোহন করেছেন এবং সেখানে নামাজ আদায় করেছেন। এছাড়াও এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক প্রশিদ্ধ পর্বত আরোহন করেছেন।

‌শাহিন বলেন, যেকোনো স্থানে ভ্রমণের জন্য অনেক পরিশ্রম, ধৈর্য এবং চ্যালেঞ্জের প্রয়োজন। পর্যটকদের যেমন বিভিন্ন শহর-নগর অতিক্রম করতে হয়, তেমনি গভীর অরণ্য, গভীন উপত্যাকা, মরুভূমির নীরব-নিস্তব্ধ পথ পাড়ি দিতে হয়। তদুপরি আমার তা খুব পছন্দের। কারণ অ্যাডভেঞ্চারের মাধ্যমে আমি নতুন কিছু আবিষ্কার করি।’

সূত্র: আল আরাবিয়া