এপ্রিল ২৭, ২০২৪

নিউজ ডেস্ক: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমরা এই লাউতলা-রামচন্দ্রপুর খাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। রামচন্দ্রপুর-লাউতলা খালের উপর অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠে ট্রাক স্ট্যান্ড। ১৪ বছর ধরে থাকা সেই অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড আমরা উচ্ছেদ করেছি খাল টিকে বাচাঁনোর জন্য। গত ২৩শে জানুয়ারি আমরা খালটি উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু করি। আজ খালে পানির প্রবাহ দেখতে পাচ্ছি। এই খালে কোন ধরনের ময়লা ফেলা যাবে না। খাল পরিষ্কার রাখা ও তদারকির জন্য বিশেষ টিম গঠন করে দেয়া হবে এবং সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। খাল দূষণকারীদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুনরুদ্ধারকৃত লাউতলা খালের শুভ উদ্বোধন ও খাল দূষণ রোধে জনসাধারনের অংশগ্রহনমূলক কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রায় ১ বছর আড়াই মাস আগে আমরা ঢাকা ওয়াসা থেকে ২৯ টি খাল বুঝে পাই। পাওয়ার পর থেকেই দেখছি দুই ‘দখল’ আর ‘দূষণ’ এর কবলে খালগুলো সব মৃতপ্রায়। খালে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ দেখার অভিপ্রায় নিয়ে আমরা কাজ করছি নিরন্তর।

নগরবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখেছি মানুষ এই খালকে ডাস্টবিন বিন হিসেবে ব্যবহার করছে। এই খালে পলিথিন, পুরনো সোফা, কার্পেট, চটের বস্তাসহ বাসা-বাড়ির সকল ধরনের ময়লা ফেলা হয়েছে। খালে ময়লা ফেলা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। এই খাল দিয়ে নৌযান চলবে, মাছের চাষ হবে এবং জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে। এর জন্য সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের সাথে জনগণেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণকে সংঘবদ্ধভাবে খাল দখলদার ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।

মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে লাউতলা খাল থেকে চারটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করে রামচন্দ্রপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর সংযোগস্থলে পৌছান। নৌকায় চড়ে মেয়র বলেন, পয়তাল্লিশ মিনিটের এই যাত্রাপথটি নৌযানে পৌছাতে মাত্র ছয় মিনিট সময় লাগবে। আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রাথমিকভাবে বিশটি ইঞ্জিনচালিত নৌকার লাইসেন্স প্রদান করবো এই পথে যাত্রী পারাপারের জন্য। তিনি বলেন, নৌকায় চড়ে আমি দেখেছি অসংখ্য খামার ও বাড়ির বর্জ্য সরাসরি এই খালে গিয়ে পরছে। খামারি ও বাড়ির মালিকদের হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা ব্যবসা করবেন কিন্তু এই খালের ও শহরের ক্ষতি করবেন না। শুধু নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে সকলের কথা চিন্তা করবেন, এই শহরের কথা চিন্তা করবেন। তিনি আরো বলেন, এই খালটির এতোদিন সঠিক তদারকি ছিল না। এখন এই খালটির দায়িত্ব নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ চলমান। খালের সীমানার মধ্যে যত স্থাপনা থাকবে সব ভেংগে ফেলা হবে। সীমানা নির্ধারণ হলে এই খালের পার দিয়ে ওয়াকওয়ে এবং সবুজায়ন করা হবে। যদি জায়গা বেশি পরিমান থাকে সেক্ষেত্রে সাইকেল লেনও করা হবে।

ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শেখ বজলুর রহমান, সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামীলীগ, ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলামসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।